করোনা মহামারি শুরুর পর অনলাইনে আগের চেয়ে বেশি সময় কাটাচ্ছেন তরুণেরা। একই সময় অনলাইনে তরুণদের বুলিংয়ের (উত্ত্যক্ত–হয়রানি) ঘটনা বেড়েছে। এক জরিপে দেখা গেছে, ৮৫ শতাংশ তরুণ অনলাইন বুলিংকে মারাত্মক সমস্যা হিসেবে দেখছেন।

কোভিড-১৯ মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে তরুণদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার ও অনলাইন বুলিংয়ে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে—এ বিষয়ে গ্রামীণফোন ও টেলিনর গ্রুপ এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের যৌথভাবে পরিচালিত একটি জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড—এই চার দেশে জরিপটি পরিচালিত হয়। জরিপে মোট ৩ হাজার ৯৩০ জন তরুণ অংশ নেন, তাঁদের মধ্যে ১৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ছিলেন বাংলাদেশি।

জরিপে অংশ নেওয়া ২৯ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তাঁরা করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগেও অনলাইন বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। তবে ১৮ শতাংশ তরুণ জানান, মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে তাঁরা আরও বেশি এ বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন।

জরিপে আরও দেখা গেছে, দেশের ৮ শতাংশ তরুণ সপ্তাহে অন্তত একবার অনলাইন বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, মেসেজিং অ্যাপস এবং অনলাইন গেমিং ও ভিডিও গেম স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম—এই তিন মাধ্যমে সাধারণত তরুণেরা বেশি অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

চারটি দেশ থেকে অংশগ্রহণকারীরা অনলাইনে বুলিং থামাতে তাঁদের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছে উত্ত্যক্ত ও হয়রানিকারীকে উপেক্ষা করা, যার ফলে ওই ব্যক্তিকে থামানো সম্ভব হয়; সিকিউরিটি সেটিংস পরিবর্তন করা, যাতে উত্ত্যক্তকারী ব্যক্তি তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে; এবং মা-বাবা বা অভিভাবকের সঙ্গে এ সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করা।

জরিপে আরও জানা যায়, বাংলাদেশে চালানো জরিপের অধীনে ৮৬ শতাংশ তরুণ কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকে ইন্টারনেটে আরও বেশি সময় কাটাচ্ছেন। সেই সঙ্গে ৩৫ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন, তারা সারাক্ষণই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, ১৫ শতাংশ প্রধানত সন্ধ্যায় ব্যবহার করেন এবং ২ শতাংশ কেবল স্কুল চলাকালীন ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, ‘এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন এবং তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিতে হবে। এ জন্য তাদের অনলাইনে নিরাপদ রাখতে আমাদের আরও দৃঢ় সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব ও প্রতিশ্রুতি নিতে হবে। জরিপের ফল বলে দিচ্ছে এটি একটি গভীর সমস্যা। এটা অনেক আশাব্যঞ্জক যে বাংলাদেশ সরকার সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় পাঠ্যক্রমে এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার মতো সময় উপযোগী একটি পদক্ষেপ নিয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *