যুক্তরাজ্যে করোনার টিকা ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তারা দেশটির মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সির (এমএইচআরএ) কাছে এই আবেদন করেছে।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক গতকাল বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাট হ্যানকক বলেন, তিনি এ কথা জানাতে পেরে আনন্দিত যে যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা অনুমোদনের জন্য তারা এমএইচআরএর কাছে সম্পূর্ণ তথ্য জমা দিয়েছে।

দিন কয়েক আগে যুক্তরাজ্য সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ জানায়, এমএইচআরএ ২৮ বা ২৯ ডিসেম্বর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দিতে পারে।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন পেলে তা ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে ভূমিকা নেবে। কারণ, ফাইজার-বায়োএনটেকের তুলনায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সংরক্ষণ, পরিবহন ও প্রদান অনেক বেশি সহজ হবে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত করোনার টিকা উৎপাদন করছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেলে ২০২১ সালের শুরুর দিকে দেশটিতে তার প্রয়োগ শুরু হতে পারে।

যুক্তরাজ্য সরকার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ১০০ মিলিয়ন ডোজের অর্ডার করে রেখেছে।

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য ২ ডিসেম্বর ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনার টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। ৮ ডিসেম্বর দেশটিতে এই টিকার প্রয়োগ শুরু হয়। পরে যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশ ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা অনুমোদন দিয়ে তার প্রয়োগ শুরু করেছে।

ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। অন্যদিকে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সাধারণ রেফ্রিজারেটরেই সংরক্ষণ করা যাবে।

ফাইজারের মতো অক্সফোর্ডের টিকারও দুটি করে ডোজ নিতে হবে। ফাইজারের ক্ষেত্রে দুই ডোজের মধ্যে ব্যবধান তিন সপ্তাহ। অক্সফোর্ডের ক্ষেত্রে এই ব্যবধান চার সপ্তাহ।

দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ বলেছে, অক্সফোর্ডের টিকা অনুমোদন পেলে তা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বের অনেক দেশকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতে উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে ইতিমধ্যে ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেলে তা বাংলাদেশের মানুষও পাবে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি নিরাপদ ও কার্যকর বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *