করোনায় মৃদু আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক ওষুধ আইভারমেকটিনের কার্যকারিতা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক এবং এর ব্যবহার নিরাপদ বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সেমিনারে ‘হাসপাতালে ভর্তি নিশ্চিতভাবে মৃদু কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় আইভারমেকটিন অথবা আইভারমেকটিনের সাথে অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন ব্যবহারের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা’ শীর্ষক গবেষণার ফল তুলে ধরা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, ৫ দিন ধরে শুধু আইভারমেকটিন পাওয়া রোগীদের ৭৭ শতাংশের ক্ষেত্রে সার্স-কোভ-২ এর ক্লিয়ারেন্স হয়েছে অর্থাৎ আরটি-পিসিআর টেস্টে তারা করোনামুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছেন। অন্যদিকে, আইভারমেকটিন ও ডক্সিসাইক্লিন পাওয়া ৬১ শতাংশ এবং প্লাসিবো পাওয়া ৩৯ শতাংশ রোগীর ভাইরাল ক্লিয়ারেন্স দেখা যায়। এছাড়া, তৃতীয় দিনে শুধু আইভারমেকটিন পাওয়া দলে ১৮ শতাংশ রোগীর ভাইরাল ক্লিয়ারেন্স হয়েছে। আইভারমেকটিন ও ডক্সিসাইক্লিন পাওয়া ৩ শতাংশ এবং প্লাসিবো পাওয়া ৩ শতাংশ রোগীর ভাইরাল ক্লিয়ারেন্স হতে দেখা যায়। সপ্তম দিনে এটি ছিল যথাক্রমে ৫০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ এবং ১৩ শতাংশ।

আইভারমেকটিন ও ডক্সিসাইক্লিন এবং প্লাসিবোর চিকিৎসার তুলনায় ৫ দিনের আইভারমেকটিন চিকিৎসায় রোগীর ক্লিনিক্যাল অবস্থার উন্নতিও ছিল সম্ভাবনাময়, যেখানে রক্তের বিভিন্ন বায়োমার্কারের উন্নতির মাধ্যমে নির্দেশিত সংক্রমণের তীব্রতার মাত্রা কমার লক্ষণ দেখা যায়।

শুরু থেকে ৭ দিনের মাথায় শুধু ৫ দিন আইভারমেকটিনপ্রাপ্ত রোগীদের দলে অন্য দুটি দলের তুলনায় সি-রিঅ্যাক্টিভ প্রোটিন (সিআরপি) ও ল্যাকটেইট ডিহাইড্রোজিনেস (এলডিএইচ) এবং ফেরিটিন লক্ষণীয়ভাবে কমতে দেখা যায়।

এই গবেষণার ফলাফলের ওপর একটি আর্টিকেল ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইনফেকশাস ডিজিজেসে (আইজেআইডি) ২ ডিসেম্বর প্রকাশ হয়েছে।

এটি আইসিডিডিআরবির র‌্যান্ডোমাইজড, ডাবল-ব্লাইন্ড, প্লাসিবো-কন্ট্রোলড ট্রায়াল, যা দৈবচয়নভিত্তিক গবেষণা। এ গবেষণায় প্রয়োগকৃত ওষুধ বিষয়ে পরীক্ষক ও অংশগ্রহণকারীর সুনির্দিষ্ট ধারণা থাকে না এবং ওষুধের পরিবর্তে ওষুধ সদৃশ বস্তু ব্যবহার করা হয়। এরকম একটি গবেষণার আওতায় ঢাকার তিনটি হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৬৮ জন কোভিড-১৯ রোগীর মধ্যে ২২ জনকে শুধু মুখে খাওয়ার আইভারমেকটিন (১২মিলিগ্রাগ্রাম দিনে একবার, ৫ দিন), ২৩ জনকে এক ডোজের আইভারমেকটিনের (১২মিলিগ্রাম) সঙ্গে ডক্সিসাইক্লিন (২০০মিলিগ্রাম ডক্সিসাইক্লিন প্রথম দিন এবং পরবর্তীতে ১০০মিলিগ্রাম দিনে দুই বার, ৪ দিন) এবং ২৩ জনকে প্লাসিবো (ওষুধ সদৃশ বস্তু) দিয়ে চিকিৎসার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা তুলনা করে দেখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *