অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও বৈদেশিক মুদ্রা রাখার অভিযোগে মনির হোসেন ওরফে ‘গোল্ডেন’ মনিরের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে র‍্যাব।
রাজধানীর বাড্ডা থানায় আজ রোববার সকালে র‍্যাব বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করে।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্র, মাদক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মনিরের বিরুদ্ধে মামলা তিনটি হয়েছে।
মনিরকে আজই আদালতে উপস্থাপন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান ওসি পারভেজ ইসলাম।
গতকাল শনিবার র‍্যাব রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় অভিযান চালিয়ে মনিরকে গ্রেপ্তার করে। র‍্যাবের ভাষ্য, মনির অবৈধ উপায়ে এক হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন।
নব্বইয়ের দশকে গাউছিয়া মার্কেটের কাপড়ের দোকানের বিক্রয়কর্মী ছিলেন মনির। এরপর মৌচাক মার্কেটের ক্রোকারিজের দোকানে চাকরি নেন। সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে যুক্ত হন বিমানবন্দরকেন্দ্রিক লাগেজ পার্টি ও স্বর্ণের চোরাচালানে। পরিচিতি পান ‘গোল্ডেন মনির’ নামে।
র‍্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, বিক্রয়কর্মী থেকে লাগেজ পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর মনির শুরুতে কর ফাঁকি দিয়ে কাপড়, কসমেটিক, ইলেকট্রনিকস পণ্য, কম্পিউটারসামগ্রীসহ বিভিন্ন মালামাল আনা-নেওয়া করতেন। একপর্যায়ে আকাশপথে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন।
স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার পর কবজায় নেন রাজউক। কারসাজির মাধ্যমে মালিক হন একের পর এক প্লটের। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গেও মনিরের সখ্য ছিল অন্য রকম।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ডিআইটি প্রজেক্টের ১১ নম্বর সড়কে মনিরের ছয়তলা বাড়ি। সেখানে গত শুক্রবার রাত ১১টায় অভিযান শুরু করে র‍্যাব। সাড়ে ১২ ঘণ্টার অভিযান শেষে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে মনিরকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় র‍্যাব। সেই বাসা থেকে গুলিসহ ১টি বিদেশি পিস্তল, ৪ লিটার বিদেশি মদ, ৩২টি নকল সিল, ৮ লাখ টাকার বেশি মূল্যমানের বিদেশি মুদ্রা, ৬০০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং ১ কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
র‍্যাব জানায়, জালিয়াতির মাধ্যমে মনির নামে-বেনামে দুই শতাধিক প্লট নিজের করে নিয়েছেন। র‍্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ২০০১ সালে তৎকালীন প্রভাবশালী মন্ত্রী, গণপূর্ত কর্মকর্তা ও রাজউকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক করে মনির রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভূমি জালিয়াতি শুরু করেন। তাঁর অবৈধ কাজে কারা সহায়তা করেছেন, সে তথ্যগুলো অনুসন্ধান করার জন্য তাঁরা দুদক, সিআইডি ও এনবিআরকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *