নিউজিল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডার্নের দল। শনিবারের এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ‘লেবার পার্টি’ ৪৯ শতাংশ ভোট পায়।

এরইমধ্যে পরাজয় মেনে নিয়েছে ২৭ শতাংশ ভোট পাওয়া প্রধান বিরোধী দল ‘ন্যাশনাল পার্টি’।

বিশ্লেষকরা বলছেন: আরডার্নের এই জয় অনুমেয়ই ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে দেশ চালানোর ক্ষেত্রে তাকে কয়েকটি ইস্যুতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।

এই ভোট হওয়ার কথা ছিল গত সেপ্টেম্বরে। কিন্তু দেশটিতে নতুন করে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ায় ভোট এক মাস স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। স্থানীয় সময় গতকাল সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে এবার দুটি গণভোটও অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল জয় নিশ্চিত হওয়ার পর সমর্থকদের উদ্দেশে আরডার্ন বলেন: প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে লেবার পার্টির প্রতি নিউজিল্যান্ডের মানুষ সবচেয়ে বড় সমর্থন জানিয়েছে। এই সমর্থন আমাদের প্রাপ্য ছিল, তা বলব না। আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, লেবার পার্টিকে এমন একটি দল হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যেটি দেশের প্রতিটি মানুষের হয়ে কাজ করবে।

আরডার্নকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ন্যাশনাল পার্টির নেতা জুডিথ কলিনস। সঙ্গে বলেছেন, ‘তিন বছর দেখতে দেখতেই চলে যাবে। আমরা অবশ্যই ফিরে আসব।’

নিউজিল্যান্ডে ১৯৯৬ সালে ‘মিক্সড মেম্বার প্রোপোরশনাল’ (এমএমপি) ব্যবস্থায় নির্বাচন শুরু হওয়ার পর কোনো দল এত আসনে জয় পায়নি। আরডার্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি পরিবেশবান্ধব আরও কর্মসূচি হাতে নেবেন। বিশেষ তহবিল গঠন করবেন পিছিয়ে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য। ধনীদের আয়কর আরো বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, লেবার পার্টির জয়ের পেছনে আরডার্নের ব্যক্তি-জনপ্রিয়তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল। কারণ মসজিদে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনা মহামারির মধ্যেও দেশ পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

তবে দ্বিতীয় মেয়াদে আরডার্নের জন্য নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কারণ ১১ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে নিউজিল্যান্ড। করোনা মহামারি মোকাবেলায় আরডার্ন সরকারের কর্মপরিকল্পনা পরিষ্কার নয় বলেও সমালোচনা আছে। মহামারি মোকাবেলায় বিপুল অর্থের প্রয়োজন পড়বে। আর মহামারি এখনো শেষ হয়নি। তাই অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে মহামারি মোকাবেলায় শুধু জনপ্রিয়তাই আরডার্নের জন্য যথেষ্ট হবে না।

৪০ বছর বয়সী আরডার্নের বেড়ে ওঠা নর্থ আইসল্যান্ডে। আরডার্ন মনে করেন, সেখানকার মানুষের যে গরীবি হাল তিনি দেখেছেন, তা তার ব্যক্তিগত জীবনদর্শনে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *