মার্কিন নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়াকে কেন্দ্র করে ট্রাম্পের অভ্যন্তরীণ মহলে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া পরাজয় মেনে নিতে ট্রাম্পকে পরামর্শ দিচ্ছেন। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করার বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে তুলেছিলেন তাঁর জামাতা জ্যারেড কুশনারও। তবে জো বাইডেনের জয় মেনে নিতে পারছেন না ট্রাম্প ও তাঁর ছেলেরা।

দুটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজয় স্বীকার করার কথা বলেছিলেন জামাতা ও জ্যেষ্ঠ পরামর্শক কুশনার। এ আলোচনা সম্পর্কে জানে—এমন আরেকটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ব্যক্তিগত আলোচনায় ট্রাম্পকে পরাজয় মেনে নেওয়ার বিষয়টি বুঝিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের জন্য নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেওয়ার সময় এসে গেছে।

ট্রাম্পের দুই ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়র ও এরিক মিত্রদের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। তাঁরা রিপাবলিকান ও ট্রাম্প–সমর্থকদের সরাসরি ফল প্রত্যাখ্যান করার জন্য বলছেন। গত শনিবার সিএনএনসহ মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোয় বাইডেনের জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

শনিবার যখন নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়, তখন ভার্জিনিয়ায় গলফ খেলতে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। সিএনএন বলছে, ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেননি, যতটা তিনি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তবে তিনি তাঁর আইনজীবীদের আইনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ফলাফল দেরি করাতে চাইছেন। তিনি নির্বাচনের ফল মেনে নেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখাননি।

ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের মুখপাত্র জ্যাসন মিলার অবশ্য গতকাল রোববার এক টুইটে কুশনারের পরাজয় মেনে নেওয়ার ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ওই গল্প সত্য নয়। তিনি বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শক কুশনার নির্বাচন নিখুঁত করার জন্য সব ধরনের আইনি সমাধান গ্রহণের কথা বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের নাম ঘোষণার পরপরই ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিজয়ী হিসেবে ভুল করে দ্রুত ফল দেওয়া হচ্ছে। এখনো নির্বাচন শেষ হয়নি। যথাযথ ভোট গণনা না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিশ্রাম নেবেন না।

বাইডেন-হ্যারিসের উপপ্রচার ব্যবস্থাপক কেট বেডিংফিল্ড বলেন, বাইডেন ও ট্রাম্পের মধ্যে কোনো কথোপকথন হয়নি। দুই প্রচার শিবিরের কোনো প্রতিনিধির মধ্যেও কোনো আলাপ হয়নি।

প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ মিত্র সাউথ ক্যারোলাইনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, প্রেসিডেন্টের পরাজয় মেনে নেওয়া উচিত হবে না। টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজও একই সুরে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এখনো পরাজয় মেনে নেওয়ার সময় আসেনি।

এদিকে এরিক ট্রাম্প তাঁর মিত্রদের কাছে বলেছেন, তিনি মনে করছেন নির্বাচনের ফল তাঁদের কাছ থেকে চুরি করে নেওয়া হয়েছে। ফলাফল পরিবর্তন করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এরিকের সুরে সুর মেলাচ্ছেন অনেক রিপাবলিকান সিনেটর। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে কিছু রিপাবলিকান নেতার ওপর হতাশা প্রকাশ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *