পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমছে। পরিস্থিতি এ রকম থাকলে দুর্গাপূজার পরই সব স্কুল–কলেজ খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে ১১ অক্টোবর।
গতকাল সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সচিবালয় নবান্নে সাংবাদিকদের বলেছেন, অক্টোবরে এই রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়লে সব স্কুল–কলেজ খুলে দেওয়া হবে। তিনি এ কথাও বলেছেন, এই রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে রাজ্য সরকার যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে গঠিত কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ কমিটি করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আগাম সমীক্ষা রিপোর্টে বলেছে, অক্টোবরেই পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ হতে পারে। এতে শিশুদের সংক্রমণ বাড়তে পারে।
ভারতে টিকাদান কর্মসূচি গতিশীল না হলে আগামী অক্টোবরে প্রতিদিন ছয় লাখ মানুষের সংক্রমণ ঘটতে পারে। রিপোর্টে এ কথাও বলা হয়েছে, শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামো এখনো দেশব্যাপী পর্যাপ্ত নয়। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই রাজ্যে শিশু চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তুলছে। ৫২৮টি পিকু বেড ও ২৭০টি নিকু বেড তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫০০ থেকে ১ হাজার হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটের বেড। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩০০ থেকে ৫০০টি পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটরও।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন, এখন এই রাজ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। তবে তৃতীয় ঢেউ এসে গেলে পরিস্থিতি কী হবে, তা বলা যাবে না। মহারাষ্ট্র ও কেরালার মতো রাজ্যে প্রতিদিন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। তাই এখন সবটাই নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। তবে সামনেই রয়েছে পূজা। এরপরই দীপাবলি ও ভাইফোঁটা। তত দিন পূজার ছুটি থাকবে। এরপর যদি পরিস্থিতি ঠিক থাকে, তবে রাজ্যের সব স্কুল–কলেজ স্যানিটাইজ করে খুলে দেওয়া হবে।
গতকাল সোমবার রাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৫১০ জন। আর মারা গেছেন সাতজন। এর মধ্যে কলকাতায় মারা গেছেন ২ জন আর সংক্রমিত হয়েছেন ৭৭ জন। এ নিয়ে এই রাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৬ জন। আর মারা গেছেন ১৮ হাজার ৩৭১ জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬২৮ জন। আর এখন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ৯ হাজার ৩৩৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে ১৯টি জেলা ছিল মৃত্যুশূন্য। আর চারটি জেলায় মারা গেছেন সাতজন। এই জেলাগুলো হলো কলকাতা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়া এবং পশ্চিম বর্ধমান।
গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৭ হাজার ১৫৯ জনের। আর সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার ২৯৩ জনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *