সুইডেনে বাংলাদেশিসহ বিদেশি পেশাজীবীদের জন্য ‘সুইডিশ ইনস্টিটিউট স্কলারশিপস ফর গ্লোবাল প্রফেশনালস’ (এসআইএসজিপি) ফুল-ফ্রি বৃত্তি দিচ্ছে। ২০২২ সালের আগস্টে শুরু হতে যাওয়া শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য এ বৃত্তি দেওয়া হবে।

সুইডিশ ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই বৃত্তি প্রদানের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভবিষ্যৎ বিশ্বনেতৃত্ব তৈরি করা। জাতিসংঘ-ঘোষিত ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নসহ নিজ দেশ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশেও যেন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ইতিবাচক অবদান রাখতে পারেন, সে লক্ষ্য সামনে রেখে প্রতিবছর এ বৃত্তি দেওয়া হয়। সুইডেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দিষ্ট স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের জন্য এ বৃত্তি দেওয়া হয়। সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বৃত্তি দিয়ে থাকে। এ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীরা পেশাদারি ও একাডেমিক সক্ষমতা বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সুইডেনের সমাজ ও সংস্কৃতি জানার মাধ্যমে দেশটির সঙ্গে একটা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক বাড়াতে পারবেন।

বৃত্তির পরিমাণ
এ বৃত্তির আওতায় টিউশন ফি সম্পূর্ণ মুক্ত। সুইডেনে জীবনযাপনের জন্য প্রতি মাসে ১০ হাজার সুইডিশ ক্রোনা (৯৫ হাজার ৮৬১ টাকা প্রায়) দেওয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিমাসহ একবার ভ্রমণের অনুদান হিসেবে ১৫ হাজার ক্রোনা (১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯০ টাকা প্রায়) পাবেন। এ ছাড়া কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এসআই অ্যালামনাই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। ১০৪টি দেশের ১৫ হাজারের বেশি অ্যালামনাই আছে এ নেটওয়ার্কে।

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে যেসব বিষয়ে স্নাতকোত্তর করার জন্য বৃত্তি দেওয়া হবে, তা এই লিংক থেকে জেনে নেওয়া যাবে। ২০২২ সালের আগস্টে নতুন এ শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে।

বৃত্তির সংখ্যা
বাংলাদেশসহ ৪২টি দেশের পেশাজীবীদের জন্য ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৩৫০টি বৃত্তি রয়েছে।

যোগ্যতা

  • আবেদনকারীকে অবশ্যই এই ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা ৪২টি দেশের মধ্যে যেকোনো একটি দেশের নাগরিক হতে হবে।
  • ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারির আগে সর্বোচ্চ তিনটি সংগঠন বা কোম্পানিতে অন্তত তিন হাজার ঘণ্টা কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • স্কলারশিপের আওতাধীন শুধু মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে হবে।
  • আবেদনকারীকে তাঁর বর্তমান বা আগের কর্মস্থলে অথবা বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডে নেতৃত্বদানের অভিজ্ঞতা প্রদর্শন করতে হবে।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপ্রক্রিয়া অনুযায়ী আগামী বছরের ৭ এপ্রিলের আগে যেকোনো একটি মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে।
  • নির্দিষ্ট সময়ের পর ভর্তি হলে বৃত্তি দেওয়া হবে না।
  • আগে সুইডিশ ইউনিভার্সিটি বা ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে কোনো ডিগ্রি নিলে প্রার্থী এ বৃত্তির আওতায় পড়বে না।

আবেদনে যা লাগবে
এই ওয়েবসাইট থেকে নির্দিষ্ট আবেদনপত্র ডাউনলোড করে ইংরেজিতে পূরণ করতে হবে। ওয়েবসাইটে দেওয়া সিভির ফরম্যাট তিন পৃষ্ঠার বেশি হওয়া যাবে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সিল, নোটারিসহ রেফারেন্স লেটার ও পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি, চাকরির অভিজ্ঞতাপত্র জমা দিতে হবে।

আবেদনের প্রক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আগামী বছরের ১৭ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করতে হবে। ভর্তি ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোর শেষ তারিখ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি। মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আট ডিজিটের একটি আবেদনের নম্বর প্রত্যেক আবেদনকারীকে মেইল করবে। নম্বরটি সংরক্ষণ করতে হবে। পরে বৃত্তির আবেদনের সময় আট ডিজিটের সংখ্যাটি লাগবে।
স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে আবেদন সম্পন্ন হওয়ার পর বৃত্তির জন্য আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় নিথ অনলাইনে আগামী ১০ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে।

আবেদনের আগে এই ওয়েবসাইট থেকে বৃত্তির জন্য বিস্তারিত তথ্য জেনে আবেদন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *