সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীর বেগম রোকেয়া সরণিতে পানি জমে যায়। বিশেষ করে সড়কটির মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের গোলচত্বর অংশ, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়ায় মানুষের ভোগান্তি বেশি হয়। আর যাঁরা রোকেয়া সরণি ধরে চলাচল করেন, যানজটে তাঁদের দুর্ভোগেরও কোনো শেষ থাকে না।

অথচ এই সড়কের জলাবদ্ধতা দূর করতে পানিনিষ্কাশনের নালা সংস্কারের প্রকল্প ছিল। টাকাও বরাদ্দ ছিল। কিন্তু নালা সংস্কারের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে সিটি করপোরেশনের হাতে যাওয়ার পালাবদলে কাজ থেমে গেছে। ফলে এই বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিয়ে মুক্তির আশা নেই।

রোকেয়া সরণির নালা সংস্কার ও নির্মাণের কাজ চলছিল ঢাকা ওয়াসার ‘ঢাকা মহানগরের ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও খাল উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায়। এতে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে পৌনে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নালা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট প্রকল্প থেকে জানা যায়, ওয়াসা গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সড়কের পূর্ব পাশে ২ হাজার ৪০০ মিটার এবং পশ্চিম পাশে ৮০০ মিটার নালার কাজ করেছে। তবে পূর্ব পাশে ৩৫০ মিটার নালার কাজ বাকি, যা কাজীপাড়া এলাকায়। এখানেই পানি বেশি জমে। পশ্চিম পাশে ১ হাজার ৯৬০ মিটারের কাজ বাকি আছে। এই অংশ মিরপুর ১০ নম্বর সেকশন এলাকার আল হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতাল থেকে তালতলা পর্যন্ত। এ অংশেও জলাবদ্ধতা বেশি হয়।

কাজ চলার মধ্যেই গত ডিসেম্বরে রাজধানীর খাল ও পানিনিষ্কাশন নালার দায়িত্ব ওয়াসার কাছ থেকে দেওয়া হয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) দায়িত্ব পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি বাতিল করে দেয়। এর কারণ হিসেবে তারা বলছে, এই প্রকল্পে খাল দখলমুক্ত করার বিষয়টিই ছিল না। তবে উত্তর সিটি রোকেয়া সরণির নালা সংস্কারের জন্য ২৪ কোটি টাকার আলাদা একটি প্রকল্প নিয়েছে।

উত্তর সিটির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম  বলেন, জলাবদ্ধতার ভোগান্তি কমাতে আপাতত ওই এলাকার নালাগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে। এতে মানুষ কিছুটা সুফল পাবে।

সরেজমিনে গত রোববার রোকেয়া সরণিতে দেখা যায়, শেওড়াপাড়া থেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে আছে। আশপাশের অলিগলিতেও পানি। ওই দিন বৃষ্টি হয়েছিল। কাজীপাড়া থেকে মিরপুর ১০ নম্বর পর্যন্ত রাস্তার পশ্চিম পাশ খানাখন্দে ভরা। এর মধ্যে পানি জমে থাকায় তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

মিরপুর ১০ নম্বরের বাসিন্দা কামরুল আহসান বলেন, ‘হাঁটুসমান পানির মধ্যে যদি বড় বড় গর্ত থাকে, তাহলে মানুষ চলাচল করবে কীভাবে। জলাবদ্ধতা দূর করা না হয় দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের বিষয়। রাস্তা সংস্কার করা কি নিষেধ?’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *