করোনাভাইরাসের অমিক্রন ধরনের সংক্রমণ রোধে ছুটিতে বেড়ানোসহ অন্যান্য পরিকল্পনা বাতিল করতে অনুরোধ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, জীবন হারানোর চেয়ে ছুটির জন্য করা পরিকল্পনা বাতিল করা অনেক ভালো। খবর বিবিসির।
তেদরোস আরও বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে আমাদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের ছুটিতে বেড়ানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। অথবা পিছিয়ে দিতে হবে।’
ডেলটা ভাইরাসের তুলনায় করোনাভাইরাসের অমিক্রন ধরন অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ এখন রয়েছে। অমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে বিধিনিষেধ জোরদার করেছে। ভ্রমণের ক্ষেত্রেও নানা বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। বড়দিনের সময় নেদারল্যান্ডসে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউস স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের যুক্তরাষ্ট্রে লকডাউন জারির কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশটির শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি এর আগে বড়দিনে ভ্রমণ নিয়ে সতর্কতা জারি করেন। তিনি বলেন, টিকা নেওয়া থাকলেও করোনাভাইরাসের অমিক্রন ধরনের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পেন, ফিনল্যান্ড, লেবাননসহ আটটি দেশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে। বোনাইরে, মোনাকো, সান মারিনোসহ বেশ কিছু এলাকায় ভ্রমণে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে এখন অমিক্রন ধরন শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন স্থানীয় সময় গতকাল বলেছেন, অমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার নতুন বিধিনিষেধ জারি করতে পারে। তবে তিনি কোনো বিধিনিষেধ জারির ঘোষণা দেননি।
লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়াসে নতুন বর্ষবরণ উদ্যাপনের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার মেয়র সাদিক খান।
গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় অমিক্রন প্রথম শনাক্ত হয়। ডব্লিউএইচও করোনার নতুন এ ধরন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।
তেদরোস গতকাল বলেন, ‘আমরা সবাই মহামারির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। আমরা পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। আমরা সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই।’
তেদরোস বলেন, ‘জীবন রক্ষার জন্য আমাদের ছুটি নিয়ে পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে, অথবা পিছিয়ে দিতে হবে।’ তেদরোস আরও বলেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৭০ শতাংশ জনগণের টিকা নিশ্চিত করা গেলে ২০২২ সালের শেষ দিকে মহামারি শেষ হতে পারে।